আমার রাজপথ ভেঙে গেছে
একটু মেরামত করে দাও।
সরকার প্রশ্ন করে, তুমি কি এদেশের কেউ?
আমি জোর গলায় বলি, নাগরিক আমি!
বলে, কাগজ দেখাও!
আমি বলি, আমার চৌদ্দ পুরুষের দেশ এটা!
ধমক গর্জে ওঠে, প্রমাণ দেখাও!
বাড়ি ফিরে মরচে পড়া বাক্স খুলি,
পুরনো কাগজের ভ্যাপসা গন্ধ,
ধুসর কাগজের স্তর উঠে আসে
১৯৬৬, ১৯৫১, ১৯৩২, ১৮৮৬, ১৮১২...
সগর্বে সরকারকে বলি, এই নাও কাগজ!
বলে, ইয়ার্কি নাকি?
তোমার শতবর্ষ প্রাচীন কাগজ দিয়ে
আমি কি তাবিজ বানাবো?
এসবের প্রমাণ আমার কাছে নেই।
বলি, হুজুর এও কি আমার দায়?
বলে, তো আমি খুঁজব নাকি?
অবশেষে ৬৬ গৃহীত হল।
এবার আবার গেলাম আবেদন নিয়ে,
আমার বাচ্চার স্কুলে শিক্ষক নেই।
আবার প্রশ্ন, কে তুমি?
হুজুর নাগরিক আমি, তালিকায় নাম আছে।
কে তুলেছে তোমার নাম?
তোমার ভাষা, চেহারা, সংস্কৃতি এদেশের নয়।
কে দিয়েছে তোমার এই কাগজ?
বলি, আপনিই তো দিয়েছেন।
আমরা আবার দেখব, এই সব তোমার জালিয়াতি।
আমার পায়ের নিচের মাটি
যেন সরিয়ে নিল এই কথাটির ঢেউ।
আমি কি তবে এবার থেকে অন্য কেউ?
ওই আকাশে রাতের বেলা জ্বলে ওঠে তারা।
সেখান থেকে এলাম নাকি?
আমার চারপাশের এই বাতাস বুঝি হঠাৎ হল পর।
হ্যাঁ, সত্যিই তো, হঠাৎ করেই রাত্রি এল।
অন্য জগত ডাক দিয়েছে দুহাত তুলে
এতো আদর এখানে নেই আর,
চল না একটু আরাম করি।
ওপার থেকে দেখি চেয়ে কাঁদছে পরিজন,
তিন ভুবনের চার সীমানায় শান্তি কোথাও নেই।
২০/৬/২০১৯