শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৪

নষ্টের মূল

একটু বস্! এইখানে বস্!
আমি ভাত খেয়ে নিই।
ভাতের এ গন্ধে ঘেন্না ধরে গেছে 
তবু থালাবাটি নিতে হয়।
তুই হাসছিস জানি রে!
আমিও হাসি আর হাঁপিয়ে উঠি।
কাপড় তো পরতে হবে, 
দোকানেও যেতে হবে কেনাকাটা আছে।
ওসবে তোর কী যায় আসে!
তুই তো দিগম্বর।
এবার মুখোশটা পরে নিই।
মুখে বসেই না, একটু চাপ দিই।
হল না, হবে না।
তুই আড়াল হ! যত নষ্টের মূল।

১১ জুলাই ২০২৪

সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৪

অনাত্মীয়


মুমূর্ষু ইঁদুরটাকে নিয়ে খেলা করে পরিপুষ্ট বিড়াল। 
রোম বেয়ে তার তেল চুইয়ে পড়ে।
ফোলা গাল, মোটা লেজ, শিকারি চোখ।
দেখে আমারও চোখ জ্বলে ওঠে।
শিকারি বন্ধু আমার, ভৃত্য আমার, ভক্ত আমার।

এদিকে ইঁদুর তো এক শিকার মাত্র।
আপনা মাংসে হরিণা বৈরী—
হরিণের জন্য দয়া হয়—
হয়তো শিকারি আমার গোত্রের নয়, তাই।
ইঁদুরের রূক্ষ লোম, ঘৃণিত অবয়ব।
নতুবা পদকর্তা তো লিখতেই পারতেন—
আপনা মাংসে ইঁদুরা বৈরী।

সেই বেড়াল যখন চুরি করে অথবা কামড় বসায়
তখন সেও বৈরী হয়ে যায় হাজেলার মতন।

১৪/১০/২০১৮

মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০২৪

ফিরে এলে?

তাড়াহুড়ো কিসের এত?
বড়লোক তাই?
বিদায় বিষাদ ঘুচেনি এখনো।
চোখের জল মুছেনি এখনো।
এখনো নাসায় তরল জমাট,
এখনো কণ্ঠে শ্লেষ্মার কপাট।
এখনো ঘর অগোছালো,
এখনো চুলায় জ্বলেনি আলো।
তারই মাঝে তুমি ফিরে এলে?
আসন পেতে দেবো কাকে ঠেলে?
ভাগ বসিয়েছ ভাঁড়ারে যখন
শুনতে তো হবেই কঠোর বচন। 
তুমিও তো ছিলে না শুধুই কবি,
রাজ্য তো তোমার বিচিত্র ছবি।
ঘাম, অশ্রু, বীর্য, রক্ত
ঝরিয়ে তবেই পেয়েছ ভক্ত।
জীর্ণ আসনে বসবে এসো
সূক্ষ্ম কুশাগ্র বিঁধবে, বসো।

20/8/2018 (posted in Fb)

শনিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৪

অসীম আসরের আসন

যে চলে যাচ্ছে তাকে যেতে দাও নির্বিঘ্নে।
আবার আসবে ফিরে ঠাঁই পেতে সাজানো আসরে। 
তখন নাহয় দর কষাকষি করে দেখো।
সে আসরের অসীম শরীরে সীমিত আসন।
দর কষাকষি তো হবেই, হবে লেনদেনের হিসাব।
যোগ বিয়োগের খেলার পরেই আসন বন্টন।
স্তরে স্তরে সাজানো আসর সবার জন্যেই।
শুধু বেছে নিতে চাইলেই চড়া দর বলবে।

১৭/৮/২০১৮ খ্রীস্টাব্দ

বুধবার, ৩১ জুলাই, ২০২৪

আবর্তন

কক্ষপথে ঘুরতে থাকা পৃথিবীর কাছে
আমার ইচ্ছে মূল্যহীন।
কারণ সেও ঘুরে
পরিবার, গ্রাম দেশের নির্দেশে।
২৩/৭/২০১৪

রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০২৪

যাচ্ছি, যাবো

যাচ্ছি যাবো। আমার এতো জলদিটা কই!
উঠতে যখন বলছ তখন চলে যাবই।
উঠে গেলেই চলতে হবে
জীর্ণ জীবন সলতে হবে।
একটু দেখি, আরও একটু দেখিয়ে যাই।
নিজের তাপে আরও একটু শুকিয়ে যাই।

১৪/৭/২০১৫

শুক্রবার, ১৪ জুন, ২০২৪

শিক্ষা ব্যবস্থায় দোষারোপের প্রবণতা – ৬

কিছু ভয়ে ভয়ে বলছি। সামাজিক মাধ্যমে হোক বা সমাজেই হোক। তর্ক আমি ভয় পাই আজকাল। কারণ তর্ক মানেই গালাগালি, দুর্বলতা খুঁজে খোঁচাখুঁচি, মিথ্যা বলার দক্ষতা।

সমাজটার একটা গভীর অসুখ হয়েছে। নাম দেওয়া যেতে পারে 'শক্তের ভক্ত নরমের যম'।

শিক্ষকরা এখন ধীরে ধীরে সবচেয়ে দুর্বল প্রাণীতে পরিণত হয়ে যাচ্ছেন। একসময় এঁরা এতই দূর্বল হয়ে পড়বেন যে এঁদের আর কোনও দরকার থাকবেই না। 

চতুর্দিকে আঘাত অপমান সহ্য করতে হয় শিক্ষকদের। এখন পড়ুয়ারাও বোঝে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করলেও এদের করার কিচ্ছুটি নেই। অভিভাবকরাও বুঝে নিয়েছেন শিক্ষকের সম্মানের চাইতে দরকারি হল তাঁদের সন্তানের আত্মসম্মান (আসলে জেদ)।  তাই ছাত্ররা সগর্বে ঘোষণা করে, 'বাবাকে বলে তোমাদের জেলে পাঠাবো' ইত্যাদি।

আমি শারীরিক বা মানসিক অত্যাচারের বিরোধী। তা সে শিক্ষক বা পুলিশ বা পরিবারের প্রধান যে কেউ হোন না কেন। কিন্তু তাই বলে শাসন উঠে যাবে তা তো মেনে নেওয়া যায় না। সমাজের শাসন নেই বলেই যত্রতত্র গজিয়ে উঠছে নেশার দোকানদারি আর মাদক সেবনকারীর উঠতি প্রজন্মের দল। শাসন নেই বলেই একদল অভদ্র প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে। শাসন দরকার। তবে শাসন আর অত্যাচার এক নয়। 

আসলে যে রোগের কথা বললাম তার শেকড় রয়েছে অনেক গভীরে। বাইরে তার নজরকাড়া রঙের ডাল-পাতা-ফল-ফুলে সাজানো। শিকড়ে রয়েছে নখ-দাঁত-কাঁটা-বিষ। সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের বেতন কমিয়ে দিন, সম্মান ফিরে আসবে। বেসরকারি স্কুল না থাকলেই ভালো। কারণ গাঁটের পয়সা দিয়ে তো ভৃত্য রাখা হয়, তাকে আর সম্মান কেন দেওয়া!

শিক্ষক তো এই সমাজের মানুষ। ভুল হতে পারে, অপরাধও হতে পারে। তার প্রতিবিধান রয়েছে। শাসনের ব্যবস্থা আছে। খোলা বাজারে তাঁদের অত্যাচার কেন হয়? একজন শিক্ষকের সম্মানহানি মৃত্যুতুল্য।মুসলমান সমাজে একটা কথা শোনা যায়, 'আলিমের বিচার অন্ধকার ঘরে।' একজন অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যায়। শিক্ষক সমাজকে কেন হেনস্তা করা? পারবেন অস্ত্রধারী ফৌজের বিরুদ্ধে এমন কথা বলতে?